স্টাফ রিপোর্টার :
নারায়ণগঞ্জ শহরে রুট পারমিটহীন গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসক ও বিআরটিএ। এ লক্ষ্যে বাস মালিকদের পারমিটের জন্য আবেদন দিতে বলেন এবং পারমিট প্রাপ্তির জটিলতা কমিয়ে দ্রুত সময়ে রুট পারমিট দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে আবেদনকৃত ১১০টি বাসের মধ্যে সম্প্রতি সিটি বন্ধন ও উৎসব পরিবহনের ৭৮টি বাসের রুট পারমিট দিয়েছে বিআরটিএ।
কাগজপত্রসহ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীতে আরও দেয়া হবে জানান জেলা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক।
জেলা বিআরটিএ তথ্যমতে, জেলায় চলাচলকারী দুই শতাধিক গণপরিবহনের (বাস) রুট পারমিট নেই। এর মধ্যে সিটি বন্ধন বাসের ৩৫টি, উৎসব ট্রান্সপোর্ট ৪০টি, বাঁধন বাসের ২২টি, বন্ধু পরিবহনের ৮টি এবং প্রায় অর্ধশতাধিক মৌমিতা বাস রয়েছে। যার সিংহভাগ ফিটনেসহীন, জড়াজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ। তবে বাস্তবে শহরে তিনশতাধিক বাস চলাচল করতে দেখা যায়। এসব বাসের যত্রতত্র পার্কিং, যাত্রী উঠানামাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শহরে সৃষ্ট যানজটে নাকাল নগরবাসী।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রশাসান ও জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে ‘রুট পারমিটহীন কোনো গাড়ি চলবে না’ বলে ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ও জেলা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। এ ঘোষণার পরদিন ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাস চলাচলে বন্ধ রাখে বাস মালিক সমিতি। পরবর্তীতে রুট পারমিট দেয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের আশ^াস্ত করলে দুপুরে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। পরে ৫ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে বাস মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক ও বিআরটিএ।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, জেলার রুট পারমিটহীন গাড়িগুলোকে পারমিট দেয়া হবে। পারমিট ইস্যু হওয়া পর্যন্ত পারমিটের জন্য আবেদনকারী গাড়িগুলোকে অস্থায়ী অনুমোদন দেয়া হবে। এ সময় বাঁধন পরিবহনের ২১টি, উৎসব ট্রান্সপোর্ট লি. ৪০ টি, দি নিউ আনন্দ ট্রান্সপোর্ট লি. ২টি, নারায়ণগঞ্জ বন্ধু পরিবহনের ১৬টি এবং সিটি বন্ধন পরিবহন লিঃ এর ৪২টি সহ মোট ১২১ টি বাসের অস্থায়ী রুট পারমিট দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অস্থায়ী রুট পারমিটের জন্য পরিবহন কোম্পানীর হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয় পরিচয়পত্র, টিন সার্টিফিকেট, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, চালকের নিয়োগপত্র, সরকারি ফিস ও অন্যান্য কাগজপত্র এবং বাস রাখার স্থান উল্লেখ করে বিআরটিএ অফিসে জমা দেয়ার কথা জানানো হয়।
পরবর্তীতে ৫ এপ্রিল জেলা যাত্রী ও পন্য পরিবহন কমিটির সভার রুটপারমিট বিহীন ১২১টি বাসের মধ্যে ১১০ টি বাসকে নারায়ণগঞ্জ সার্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ৮৩ টি বাস অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্তর্ভুক্ত বাসগুলোর মধ্যে উৎসব ট্রান্সপোর্ট লি. এর ৪০ টি, সিটি বন্ধন পরিবহন লি. এর ৩৯ টি, বাঁধন পরিবহন লি. ২ টি এবং আনন্দ পরিবহন লি. ২টি বাস রয়েছে। ওই ৮৩ টি বাস এবং বাস রাখার স্থান পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত অস্থায়ী রুট পারমিট ইস্যু করা হয়।
অস্থায়ী রুট পারমিট ৮৩ টি বাসের মধ্যে উৎসব ট্রান্সপোর্ট লি. এর পরিদর্শনে ৪০টি এবং সিটি বন্ধন পরিবহন লি. এর ৩৮টি মোট ৭৮টি বাসের রুট পারমিট দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল বলেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাই, বাস ও পার্কিং পরিদর্শন করে আমরা ৭৮টি বাসের সবকিছু ঠিকঠাক পেয়েছি। আর এই বাসগুলোর রুটপারমিট দেয়া হয়েছে। আরও আবেদন আমরা পেয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আরও বাসের রুট পারমিট দেয়া হবে। আমরা মোট ১১৮টি বাসের রুট পারমিট দিবো।